নতুন চাকরী পেয়েছি দিল্লীতে, কাল সকালে রওনা হবো রাজধানী এক্সপ্রেসে।
ঘটা ক’রে আমাকে বিদায় দেবার উৎসব হ’ল স্বপনদা আর আভাবৌদির বাড়ীতে। আমার ফ্ল্যাট আর ওদের বাড়ীর মধ্যে মাত্র চারটি বাড়ীর ব্যবধান।
রাতদুটোর সময় ফ্ল্যাটের দরজায় ধাক্কা; ঘুমচোখে দরজা খুলে দেখি – আভাবৌদি; সঙ্গে একটা বড় স্যুটকেশ; বললো, ‘ঢুকতে দাও আমাকে, বাবলু’।
পরে বললো, ‘তোমার স্বপনদা খুশী নয়, ওকে আমি ছেলে দিতে পারিনি ব’লে। শুধু মিষ্টির বাবা নয়, ও বাড়ীর কেউই ভালবাসে না আমাকে; ওখানে আমি কাটাতে পারবো না সারা জীবন।‘
বললাম, ‘মিষ্টির মা যদি মিষ্টিকে ছেড়ে থাকতে পারে, তা হ’লেই চ’লবে।‘
- ‘পারলে নিয়ে যেতুম আমার মিষ্টিকেও; এত রাতে ওকে উঠিয়ে আনতে গেলে ওর বাবাও উঠে পড়তো। এখানে ভালই থাকবে ও। যদি পারি, তুলে নিয়ে যাবো ওকে একদিন।‘
পরের দিন আমার সঙ্গে ট্যাক্সি ক’রে শিয়ালদা স্টেশনে গেলো আভাবৌদি – সর্বাঙ্গ বোরখায় ঢেকে; ও অনলাইন টিকিট বুক ক’রেছে, শুধু একই ট্রেণে নয়, একই কম্পার্টমেন্টে, দুটো লোয়ার বার্থের একটা আমার আর একটা আভাবৌদির, ট্রেণে ওর নাম মেহেরউন্নিসা। ঐনামে ওর এক স্কুলের বন্ধু ছিল, তার কিছু আইডেনটিটি ডকুমেন্ট আছে ওর সঙ্গে।
ট্রেণ থেকেই এস্-এম্-এস্ পাঠালাম দিল্লীর রিসিভিং পার্টিকে যাতে ওখানে পৌঁছে জবাবদিহি না ক’রতে হয়; দিল্লীবাসী দাদা আর বন্ধু বিভাসকে জানালাম আমার নিকট বান্ধবী শিউলিকে নিয়ে যাচ্ছি, ও এখন আমার সঙ্গেই থাকবে।
দাদা স্টেশনেই জিগ্যেস করলো আমাকে, ‘মেয়েটিকে আগে দেখেছি মনে হচ্ছে’। আমি বললাম, ‘শিউলি আমাদের পাড়ারই মেয়ে, হয়তো দেখেছো কখনো’।
দিল্লীতে ইস্ট অফ কৈলাসে এক বেডরুমের ফার্নিশড ফ্ল্যাট; দুজনে মিলে সংসার পাতলাম মন ভরে; আভার আগের অভিজ্ঞতা খুবই কাজে লাগলো। আমার নতুন চাকরী টিসিএসে, সেখানে বললাম আমি এখন বিবাহিত, স্ত্রী শিউলি। টিসিএসের স্টাফেদের প্রায়ই বিদেশে গিয়ে কাজ ক’রতে হয় বলে, টিসিএস আমদের স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই পাসপোর্ট ক’রিয়ে দিতে চাইলো, শিউলি বললো, ‘দাঁড়াও পাসপোর্ট করার আগেই এফিডেভিট ক’রে নাম ব’দলে ফেলি’। বিয়ের আগে ওর নাম ছিল আভা মজুমদার, স্বপনদার সঙ্গে বিয়ে হবার পরে ও হ’য়েছিল আভা মিত্র। এখন নতুন নামের সঙ্গে আমার পদবী জুড়ে হ’ল শিউলি ঘোষ।
পরের রবিবারে দাদার বাড়ীতে গেলাম মা-বাবার সঙ্গে দেখা করার জন্যে। মা আমাকে আড়ালে ডেকে বললো, ‘স্বপণের বৌ তোর সঙ্গে কেন এসেছে বাবলু?’ আমি বললাম, ‘কিছু মনে কোরোনা মা, তুমি আজকাল আর ঠিকমতো দেখতে পাওনা চোখে। ওতো আমাদের পাড়ার মেয়ে শিউলি। কয়েকমাস আগে ওর বাবা মা দুজনেই গাড়ীর অ্যাক্সিডেন্টে মারা যান, তারপর থেকে মামার বাড়ীতে উঠেছে – আমাদের পাড়াতেই – ছ-নম্বর বিনয় বসু রোডে। আমার সঙ্গে খুব ভাব, নাটক ক’রেছি ওর সঙ্গে, আমরা দুজনেই নাচ শিখছি একসঙ্গে; পড়াশোনাতে খুব ভালো ও, এমএসসি পাশ, বাড়ীর কাজও খুব ভালো জানে, তোমাকে শুক্তো আর মুড়ির ঘন্ট ক’রে খাওয়াবে। ওর মামা বললেন – দিল্লী নিয়ে যাও ওকে – তোমার মা-বাবা ওকে পছন্দ ক’রে ঘরে তুলবেন নিশ্চয়ই।‘
শিউলি কলকাতা ইউনিভার্সিটি থেকে অঙ্কে এমএসসি, ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট, শ্যামবাজার গার্লস স্কুলে পড়াবার সময় বিএডও ক’রেছিল; খুব সহজেই রাইসিনা বেঙ্গলী স্কুলের এ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেস হ’য়ে গেলো। আভাবৌদি যখন আমার দরজায় এসে বলেছিল আমার সঙ্গে দিল্লি যাবে, তখন বড় চিন্তা ছিল – কী-ক’রে ওর খরচ চালাবো; এক সপ্তাহের মধ্যেই সমস্ত সমস্যার সমাধান হয়ে গেলো।
দিল্লীতে আসার সাতদিন পরে শিউলি প্রথম খোলাখুলি প্রেম ক’রলো আমার সঙ্গে, নীচু ক’রলো ওর বৌদিত্বের শাসন-তর্জনী। শুক্কুরবারের রাত, পরের দিন সকালে ওঠার তাড়া নেই। ডিনারের পরে একটা সিগারেট ফুঁকে ঘরে ঢুকলাম, একটা পাশবালিশের উপর মাথা রেখে আধশোয়া শিউলি, পরণে একটা রংবেরঙের লুঙ্গি আর ঢিলেঢালা টি-শার্ট; একটা মিষ্টি ক’রে চুমু খেয়ে শিউলির টি-শার্টটা খুলেই চমকে গেলাম – পুরুষের মতো উদোম বুক – ঢেকে রাখার কিছু নেই। হতাশ হ’য়ে পিছিয়ে এলাম একটু; এতদিন আভাবৌদিকে দেখে লোভ লাগতো। শিউলি বললো, ‘চ্যাপ্টা হ’লেও শুকনো নয়, একটু চেখে দেখো, বাবলু ঠাকুরপো; তিনবছরের মেয়ে মিষ্টি এখনও মাঝেমাঝে খায়; কলকাতা থেকে বেরোনোর আগে শেষ খাইয়ে এসেছি-‘। কোন উত্তর আসছিল না মাথায়; ধীরে ধীরে ওর বোঁটাদুটোর একটাকে ঠোঁটের ফাঁকে নিয়ে চুমুক দিলাম – মন ভরে গেলো শিউলির প্রাণের সুধায়। মুগ্ধ হয়ে দেখলাম ওর চোখদুটো, অজস্র চুমুতে ভরিয়ে দিলাম ওর ঠোঁটদুটো; দেখতে চাইলাম ওর রঙ্গীন লুঙ্গিটার ঢাকা খুলে। আবার শিউলি যেন আভাবৌদি হ’য়ে ধমক দিল, ‘একটু সামলাও, বাবলু’; তারপরে বিছানায় দু-পা ছড়িয়ে শুয়ে পড়লো, বললো, ‘যা বলছি শোনো, উবু হ’য়ে বসো আমার বাম উরুর উপরে, আমার ডান পা তুলছি তোমার কাঁধে,……’; আমার নির্মল আনন্দ – প্রাণভ’রে উজাড় ক’রে ঢেলে দিলাম শিউলির মধ্যে। নিঃস্পন্দ শিউলি, তৃপ্তির আনন্দাশ্রু ওর দুচোখে। শিউলিকে বিছানায় রেখে একটু আদর ক’রলাম; ওর চোখদুটো বোজা। এখন সিগারেট নাহ’লে চলবে না’, বেরিয়ে গেলাম বারান্দায়। হঠাৎ মনে এলো আভাবৌদির তিন বছরের মেয়ে মিষ্টির মুখখানা; অনেক খেলা-গল্প ক’রেছি ওর সঙ্গে; আবার কোনদিন যদি ওর সঙ্গে দেখা হয়, আজকের কথাগুলো বলা যাবে না...।
শিউলির সঙ্গে দুর্দান্ত সেক্স করার সাতদিন বাদে শিউলি জানালো ওর পিরিয়ড হয়নি এবারে। তুঙ্গে উঠলো আমাদের খুশী – প্রথম চেষ্টাতেই বাজীমাৎ। আমি ওকে অবিলম্বে নিয়ে গেলাম গাইনিকোলজিস্টের কাছে সগর্ব্বে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে জানা গেল শিউলি দুমাস ধ’রে গর্ভবতী, অর্থাৎ আমার সঙ্গে দিল্লী আসার দেড় মাস আগে থেকে। চুপসে গ্যালো আমার গর্ব্বের বেলুন।
শিউলির দিকে তাকালাম জিজ্ঞাসু চোখে; চোখেই পেলুম ওর উত্তর – শিউলি গর্ভপাতে রাজী নয়; জীবনের ধন সে ক’রবেনা অপচয়; ক’রলো অনুনয়, ‘ভ্রূণের বয়স নিয়ে আর কারো সাথে যেন কথা না হয়।‘
শিউলি আর আমি দুজনেই এখন হাসপাতালে, ওর বাচ্চা প্রসব হবে এখন যে কোনো সময়ে; আর আমাকে হাসপাতালে ওর কাছাকাছি থাকতে হবে ওকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য, ডাক্তারদের কাছে খবর নেওয়ার জন্যে এবং প্রয়োজনমতো খিদমৎ খাটার জন্যে। মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে স্বপনদাকে খবর দিই, শিউলি স্বপনদার ঔরসে গর্ভবতী ওরই বিবাহিতা স্ত্রী আভা। কিন্তু শিউলির একেবারেই মত নেই।
শিউলির ব্যথা শুরু হ’ল ভোর রাত্রে। অনেক কষ্ট সহ্য করতে হ’ল ওকে, জটিল অবস্থার মধ্যে ওর প্রাণসংশয় হচ্ছিল; মনে হ’ল হয়তো স্বপনদাকে ওর মৃত্যু সংবাদ দিতে হবে, নয়তো আমাকে একাই মাথা পেতে নিতে হবে এই শাস্তি। এইরকম গুরুত্বপূর্ণ অবস্থায় নার্স ঠিকমতো ইনস্ট্রুমেন্ট চালাতে পারছিল না; মাথা ঠাণ্ডা রেখে নার্সকে সাহায্য করলুম ওর কাজে।
ভোর পাঁচটায় একটি মেয়ের জন্ম হ’ল; ওজন ৩.৪ কেজি; শিউলি আর মেয়ে দুজনেই বেঁচে গেল; শিউলিকে রক্ত দিতে হ’ল অনেকক্ষণ ধ’রে। মেয়ের নাম দেওয়া হ’ল রিমি।
হাসপাতাল থেকে ফিরে এসে শিউলি বললো, ‘এখন যদি মিষ্টি থাকতো এখানে..., রিমিকে নিয়ে অনেক আদর ক’রতো, অনেক খেলা ক’রতো। কবে ওকে চুরি ক’রে নিয়ে আসবে এখানে?’
রিমি হবার পর শিউলি আর আমি ব্যস্ত হ’য়ে পড়লাম ওর দেখাশোনা নিয়ে। কী ক’রে যে কাটতো সারাদিন জানিনা; পরস্পরের জন্যে সময় দেবার বড় একটা অবসর থাকতো না। রিমির বয়স তিন হবার আমরা দুজনেই কেরিয়ার তৈরী করার দিকে মন দিলাম। বছর পাঁচেক পার্টটাইম গবেষণা ক’রে দুজনেই পি-এইচ-ডি ক’রলাম, শিউলি ম্যাথেমেটিক্সে আর আমি কম্পিউটিংএ।
আর একটি দিনের কথা মনে গাঁথা থাকবে চিরদিন। শিউলির সঙ্গে যৌন সংসর্গের জন্যে আমি সেদিন একেবারেই প্রস্তুত ছিলাম না। আমরা দুজনে ভক্তিগীতি শুনছিলাম, মন-প্রাণ দিয়ে ধ্যান ক’রছিলাম, একদম ভাবিনি যে মনে মনে আমরা অন্তরঙ্গ হ’য়ে উঠেছি; ভক্তিগীতি যেন আমাদের ব’লছিল সহজ হ’তে, না চাইতেই আমরা যা পেয়েছি – আকাশ, আলোক, দেহ, মন, প্রাণ, আমরাও যোগ্য হবো সে মহাদানের, দান ক’রবো আমাদের নিজেদেরকে। আমি আমাকে ছেড়ে দিলাম শিউলির হাতে; শিউলি নিজেকে ছেড়ে দিলো আমার হাতে। আমি শিউলিকে কাছে নিয়ে বসালাম আমার কোলে। হারিয়ে গেলো আমাদের দুজনের ব্যবধান, যত সীমারেখা, মনে হোল এক দেহ, এক মন আমাদের।
মাসখানেক পরে শিউলির প্রেগন্যান্সি টেস্ট পজিটিভ হ’লো। শিউলির গর্ভে এল আমার নিজের সন্তান। ন’মাস পরে নির্বিঘ্নে জন্ম নিলো আমাদের ছেলে মিন্টু। এবারেও শিউলি বললো, ‘কবে মিষ্টিকে নিয়ে আসবে?’
পরে একবার মা রিমি-মিন্টুকে দেখে বলেছিল, মিন্টু অবিকল আমার মুখ পেয়েছে, রিমিকে দেখে স্বপনকে মনে পড়ছে।
আভা উধাও হ’য়ে যাবার পরে পনেরো বছর কেটে গেছে; আভাকে ফিরে পাবার জন্যে চেষ্টার ত্রুটি করেনি স্বপনদা; আভার মা-বাবাকে বারবার ফোন ক’রেছে, আমাকেও চিঠি দিয়েছে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই; কিন্তু নিজের মা-বাবা, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব কাউকে ব’লেনি যে আভাবৌদি উধাও হ’য়ে গেছে; আমি বাদে বাকী সবাই জানে আভাবৌদি রাঁচীতে ওর বাবা-মার কাছে ফিরে গেছে পিএইচডি ক’রতে। অন্তরঙ্গ বন্ধু ব’লে কেবল আমাকেই স্বপনদা অনেক মনের কথা লিখেছে হয়তো প্রায় চারশো বার; আমি প্রতিবারই সহানুভূতির সঙ্গে উত্তর দিয়েছি ওর চিঠির, কেবল একটা মিথ্যে কথা সত্যির চেয়েও বিশ্বাসযোগ্য ক’রে রেখেছি – আমি আভাবৌদির কোন খবর জানিনা। দুবছর পার হবার স্বপনদাকে জানিয়েছি – আমি শিউলি বলে আর একটা মেয়েকে ভালবেসে বিয়ে ক’রেছি। এটা আর একটা মিথ্যে কথা, কিন্তু দিল্লীতে আমার সমস্ত বন্ধুরা, এমনকি সব সহকর্মীরাও এটা সত্যি ব’লেই জানে; মা-বাবা দাদা-বৌদিরাও একই কথা বিশ্বাস করে।
হঠাৎ একটা বিয়ের নিমন্ত্রণ পত্র পেলাম – স্বপনদার বিয়ে; সঙ্গে একটা ছোট চিঠি:
“প্রিয় উদয়,
রাঁচী থেকে তোর আভাবৌদির বাবা জানিয়েছেন যে আভার মৃত্যু হ’য়েছে সর্পাঘাতে। তুইতো জানিস আমাদের মা মারা গেছেন প্রায় একবছর হোলো; ছোটভাইতো অনেকদিন চেন্নাইতে কাজ ক’রছে; বাড়ীতে এখন আমাদের বাবা আর আমি, দুই পুরুষ আর আমার মেয়ে মিষ্টি; সংসার গুছিয়ে রাখার জন্যে একজন ঘরণীর খুব দরকার; তাই আবার বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিলাম । তুই প্লীজ আসিস্, বৌ-ছেলেমেয়েদের নিয়ে আসবি, ওরা তো কখনো আসেনি আমাদের বাড়ীতে, বাবা বলেছেন তোর বৌকে এয়ো ক’রতে।
ভালবাসা নিস্।“
নিমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে শিউলি আর আমি হাজির হলুম স্বপনদার বাড়ীতে, বৌভাতের দিন বিকেলে। বিয়ের দিনে উৎসবের ঘটা মূলতঃ ক’নের বাড়ীতে, বরের বাড়ীতে তেমন কিছু হৈচৈ করার নেই; এছাড়া এয়ো হয়ে বর-বরণ করার ইচ্ছে আদৌ নেই শিউলির। ছেলেমেয়েদের রেখে গেলাম দিল্লীতে আমার বৌদির হেফাজতে। শিউলির মনে একদিকে ধরা পড়ে যাবার ভয়, যদিও এখন গায়ে-গতরে ও অনেকটাই বেড়েছে, তবুও কেউ চিনে ফেলতে পারে; আবার অন্যদিকে বড় সাধ মিষ্টিকে একবার চোখে দেখার।
সিংহাসনে ব’সে সোনার মুকুট-পরা ক’নে; শিউলি আর আমি নিজেদের পরিচয় দিয়ে ক’নের হাতে তুলে দিলাম আমাদের উপহার – একটি গিফ্ট কার্ড আর রজনীগন্ধার কয়েকটি ডাঁটা।
ক’নের সিংহাসনের পাশে কয়েকটি মেয়ে আর একটি ছেলে – শিউলি বোঝার চেষ্টা ক’রছিল ওদের মধ্যে কেউ মিষ্টি কিনা। ছেলেটি আমার নাম শুনে একটু উচ্ছসিত হ’য়ে বললো, ‘আমার নামও বাবলু’।
‘তাই নাকি?’ ব’লে আমি হাত মেলালাম ওর হাতে। তাকালুম ওর মুখের দিকে – বছর পনেরোর মতো ছোট আমার থেকে; সেই পনেরো বছর আগের আমি আবার যেন দাঁড়িয়েছে আমার সামনে।
‘আভা!’ স্বপনদার গলা শোনা গেল, সচকিত হ’য়ে শিউলি সাড়া দেবার আগেই স্বপনদা এসে হাজির, ক’নের দিকে তাকিয়ে বললো, ‘আমার নতুন বৌয়ের নাম রেখেছি – আভা, ও প্রায়ই ভুলে যায় সাড়া দিতে, ওর আসল নাম নন্দিতা।‘
শিউলির সচকিত হওয়ার পরেই অপ্রতিভ হ’য়ে যাওয়া নজরে পড়লো শুধু আমার নয়, আর এক বাবলুরও, যদিও কোনো বাবলুই প্রশ্ন ক’রলো না।
মিষ্টির সঙ্গে দেখা হোল, শিউলি ওকে একটু আদরও ক’রলো নিজের পরিচয় না দিয়ে, বড় বাবলুকাকুর বৌ শিউলি কাকিমা হিসেবে, বললো, ‘চলো মিষ্টি আমার সঙ্গে, দিল্লীর রাইসিনা ইস্কুলে পড়াবো তোমাকে।‘
মিষ্টি একটু অবাক হ’য়ে বললো, ‘আপনি খুব ভালো, কাকিমা। ইচ্ছে ক’রছে আপনার সাথে যাই। কিন্তু বাবা চাইবে না এত খরচ ক’রতে; এছাড়া উনি একদিনও আমাকে চোখে আড়াল ক’রতে চাননা, উনি শুধু আমার বাবা নয় মা-ও।‘
পরে রাত্রে আমাকে একা পেয়ে শিউলি বললো, ‘তুমি তোমার স্বপনদাকে একটু বলো না, বাবলু। বলো, মিষ্টি আমাদের কাছে মেয়ের মতো থাকবে।‘
আমি বললাম, ‘আরও ভালো হয়, যদি তুমি বলো, মিষ্টি তোমার মেয়ে।‘
- ‘যদি তাই বলি, তুমিও আর মুখ দেখাতে পারবে না স্বপনদার সামনে; ওর বৌকে নিয়ে উধাও হ’য়েছো এতদিন, অথচ রয়েছ অন্তরঙ্গ প্রিয় বন্ধুর মতো। আমাদের ঘর ভাঙবে, নতুন আভাও জোড় বাঁধতে পারবে না স্বপনের সঙ্গে। বরং তুমি দেখো একবার চেষ্টা ক’রে, স্বপনদাকে বোঝাও এতে মিষ্টির ভালো হবে।‘
- ‘দেখবো চেষ্টা ক’রে, যদি রাজী হয় স্বপনদা। তবে আমাদেরও দুটি ছেলেমেয়ে আছে; হঠাৎ এক নতুন দিদি পেয়ে তাদের কীরকম লাগবে জানিনা।‘
শিউলি কিছু উত্তর দেবার আগেই ওকে জিগ্যেস ক’রলাম সম্পূর্ণ অন্য কথা, ‘নতুন বাবলুকে কেমন দেখলে?’
- ‘দারুণ ভালো! লোভ লাগছে আবার ওর সঙ্গে পালিয়ে যেতে। দেখো, নতুন আভা পালাবে ওকে নিয়ে –‘
আমি স্বপনদাকে অনুরোধ ক’রেছিলাম, মিষ্টিকে আমাদের সঙ্গে দিল্লীতে যাবার অনুমতি দিতে। রাজী হয়নি স্বপনদা; বলেছিল – ‘মিষ্টির এবারে হ্যায়ার সেকেণ্ডারী পরীক্ষা, দেশবদলের সময় নয় এখন। এছাড়া আভা আর মিষ্টির মধ্যে মা-মেয়ের সম্পর্কটা গড়ে তোলার সময় তো এখনই।‘
অগত্যা বৌভাতের পরের দিন শিউলি আর আমি বেরিয়ে পড়লাম স্বপনদার বাড়ী ছেড়ে, তবে সোজা দিল্লীতে ফিরলাম না; শিউলি বললো, ‘চলো রাঁচীতে বাবাকে একটা সারপ্রাইজ ভিসিট দিই। পনেরো বছর বাদে তোমার সঙ্গে দেখে চিনতে পারে কিনা দেখি।‘
রাঁচীতে গিয়ে শিউলি, অর্থাৎ আভা দেখলো তার বাবাকে। ও ভেবেছিল, বাবা ওকে চিনতে পারবেন না এত বছর পরে; এখানে এসে দেখলো বাবাকে চেনাও দুঃসাধ্য। আট বছর হ’ল মা পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে গেছেন; বাবা ছাড়া বাড়ীতে আছে মাত্র আর একজন – কাজের লোক – তাকে আভা জানে অমুকাকা ব’লে – রান্নাবান্নাও ক’রে, বাগানে কাজও করে। বাবা একাই থাকেন, বেশীর ভাগ সময়টাই কাটে তাঁর গল্প-কবিতা-উপন্যাস লিখে, কিছু সময় কাটে গান শুনে, বই পড়ে বা টিভি দেখে।
আমি ব’লতে পারলাম না যে স্বপনদা আমাকে জানিয়েছিল আভার মা চলে যাওয়ার কথা; শিউলির মনে কষ্ট হবে বলে তখন ওকে জানাতে পারিনি; তার কয়েকদিন পরেই শিউলি জন্ম দিয়েছিল আমাদের ছেলে মিন্টুর।
বাবা চিনতে পারলেন আভাকে, বললেন, ‘এতদিন কোথায় ছিলিস?’
আভা বললো, ‘দিল্লীতে, এই বাবলুর সঙ্গে, তোমার জামাইকে লুকিয়ে। তোমাকে বলিনি, যাতে স্বপন জিগ্যেস ক’রলে তোমাকে মিথ্যে বলতে না হয়। এখন বাবলুকেই প্লীজ মেনে নাও তোমার জামাই ব’লে; মিষ্টির পরে তোমার হ’য়েছে আর এক নাতনী রিমি, বয়স এখন ১৪ আর নাতি মিন্টু, তার বয়স ৮। দিল্লীতে আমার জা, মানে বাবলুর বৌদির কাছে ওদের রেখে বেরিয়েছি আমরা।‘
বাবা বললেন, ‘তুইতো আমাকে কিছুই জানাস নি, এদিকে স্বপনতো উত্যক্ত করেছে আমাকে বারবার। কতবার এসেছে এখানে তোর খোঁজে, কোনো নোটিশ না দিয়ে। ওর সব আত্মীয়স্বজনকে জানিয়েছে যে তুই এখান থেকে পি-এইচ-ডি ক’রছিস।‘
- ‘তুমি কি জানো, স্বপন বিয়ে ক’রেছে কদিন আগে? তুমি নাকি বলেছো, আমি সাপের কামড়ে মরে গেছি?’
- ‘এছাড়া কোন উপায় ছিল না আমার। আমি তো ভাবতেই পারিনি, মিষ্টির মতো মেয়েকে ফেলে তুই কোথাও গিয়ে বেঁচে আছিস, এক-দুদিনের জন্যে নয় পনেরো বছর ধ’রে।‘
- ‘তুমি তো কখনও মিথ্যে বলো না, বাবা?’
- ‘মিথ্যে বলি না বটে, তবে বই লেখার সময় অনেকটাই বানাতে হয় পাঠকদের মন রেখে; এখানেও গল্প বানিয়েছি যাতে স্বপন তোর চিন্তা ছেড়ে বাঁচতে শেখে, নিজের জন্যে ভাবতে পারে; ওকে বলেছি সর্পাঘাতে মৃত্যু হ’লে দাহ ক’রতে নেই, বাগানে মাটি চাপা দিয়ে একটা বেদী তৈরী ক’রেছি, যার উপর পুঁতেছি একটা আম গাছ।‘
একটু থেমে জানলা দিয়ে হাত বাড়ালেন বাবা; বললেন, ‘ঐখানে আমগাছটা, স্বপন বলেছে - কাল আসবে আমার বাড়ীতে ওর নতুন বৌ আর মিষ্টিকে নিয়ে। ও বলেছে, নতুন বৌ-এর নাম রাখবে – আভা, ও হবে আমার মেয়ে। ওরা হয়তো দেখবে ঐ আমগাছ আর তার নীচের বেদীটা। তোরা দুজন ঐপাশের ঘরটায় থাকিস গা-ঢাকা দিয়ে।‘
‘বাবা, এই আপনার মেয়ে আভা’, এই ব’লে নন্দিতাকে নিয়ে ঘরে ঢুকলো স্বপন, প্রণাম ক’রলো আভার বাবাকে, দেখাদেখি নন্দিতাও তাই ক’রলো।
হাত বাড়িয়ে আশীর্বাদ ক’রলেন বাবা, তারপরই থমকে দাঁড়ালেন, দরজার দিকে তাকিয়ে জিগ্যেস ক’রলেন. ‘মিষ্টি আসেনি?’
- ‘না, বাবা, ও পরীক্ষার পড়া নিয়ে ব্যস্ত...’
- ‘কক্ষনো না, যত পড়াই থাক, এই ক’ঘন্টার জন্যে দাদুর কাছে আসার সুযোগ ও কখনও ছাড়বে না। ওর কি পছন্দ হয়নি নতুন মাকে?’
- ‘না না, নতুন মায়ের সঙ্গেই তো ও ছিল সারাদিন; দাদু আর দাদুর বাড়ীর গল্প ক’রেছে নন্দিতার সঙ্গে। আজ ভোর থেকে দেখছিনা ওকে....‘
পাশের ঘরে ব’সে শিউলি আর আমি শুনছিলাম স্বপন আর বাবার কথোপকথন। স্বপনের কথা শেষ হ’বার আগেই এঘর থেকে ওঘরে ঝাঁপ দিল শিউলি কোমরবেঁধে। গত পনেরো বছরে কখনো শুনিনি শিউলির এমন বিধ্বংসী হুঙ্কার,- ‘আমতা আমতা ক’রছো কেন মিষ্টির বাবা? পরিস্কার ক’রে ব’লো মিষ্টি কোথায়? মেয়ের বয়সী বৌকে নিয়ে কাল রাতে যখন শুয়েছিলে স্ফূর্ত্তি ক’রার জন্যে, তখন কি দেখেছিলে মিষ্টি দুধ খেয়ে শুতে গেছে কিনা? গুডনাইট বলেছিলে ওকে, নিজের বেডরুমের দরজায় শিকল তোলার আগে?’
‘সত্যি বলছি, মিষ্টির মা। ও রোজকার মতো হরলিকস্ খেয়ে শুতে গেছে; ওকে বিছানায় শুইয়ে আমরা ঘরে এসেছি। দরজা বন্ধ করার দরকার মনে ক’রিনি। জানি ও উঁকি মারবে না। ভোরে উঠেই খোঁজ ক’রেছি বেডটি দেবার জন্যে – কোথাও চিহ্ন নেই ওর।....তুমি এতদিন এখানেই ছিলে, মিষ্টির মা? হ’য়ে গেছে তোমার পি-এইচ-ডি? ফিরে চলো আমার সঙ্গে, প্লীজ।
বাবা, কেন আপনি বলেছিলেন ও সাপের কামড়ে মারা গেছে – ওর সমাধির উপর আমগাছের চারা পুঁতেছেন?’
বাবা হতভম্ব হ’য়ে কিছু কথা খুঁজছিলেন। গল্পে উপন্যাসে জোড়াতালি দিয়ে অনেক মিলিয়েছেন উনি। এখন সাপেড় কামড়ে মরা মেয়ের হঠাৎ ফিরে আসা, আর তাকে ফিরে পাবার জন্যে জামাইয়ের পনেরো বছরের প্রতীক্ষার দাবী, এর সমাধান করার মন্ত্র তার জানা নেই।
শিউলিও হতবাক। ও ভাবছিল বলে, ‘আমি পি-এইচ-ডি ক’রেছি ঠিকই, তবে রাঁচীতে বাবার এখানে থেকে নয়, দিল্লীর রাইসিনা স্কুলে টিচারি করার সময় – কাজের ফাঁকে ফাঁকে গবেষণা ক’রে‘; কিন্তু সাহস ক’রলোনা কিছু বলতে; ও ব’লতে পারবেনা কি ক’রে ও কাজ পেলো দিল্লীর রাইসিনা স্কুলে, ব’লতে পারবেনা যে ও বাবলুর সঙ্গে পালিয়ে দিল্লীতে এসেছে, স্বপনের অন্তরঙ্গ বন্ধু বাবলু বিশ্বাসঘাতকতা ক’রে এসেছে পনের বছর ধ’রে।
হঠাৎ যেন আবার পনের বছর আগের যৌবন ফিরে এসেছে স্বপনের দেহে মনে; ও ঝাঁপ দিয়ে হাত ধ’রলো শিউলির; বললো, ‘প্লীজ, আমাকে ক্ষমা ক’রে দাও, মিষ্টির মা। তুমি পনেরো বছর ধ’রে কি ক’রেছো, তার কোনো কৈফিয়ৎ চাইবোনা আমি; ফিরে চলো আজ আমার সঙ্গে; আমরা দুজনে মিলে ফিরিয়ে আনবো মিষ্টিকে, ও আর পালাবে না।‘
এতক্ষণে প্রথম শোনা গেল নন্দিতার আকুতি-ভরা কন্ঠস্বর, ‘আমি কোথায় যাবো, স্বপন? মাত্র দুদিন হ’লো আমরা শপথ নিয়েছি সাত জন্ম ধ’রে কাছে থাকার...’
‘তুমি আমার সঙ্গেই থাকবে নন্দিতা, আভার ছোট বোন হ’য়ে, তোমার মতো সতীনকে ও আদর ক’রবে নিজের বোনের মত।‘
পাশের ঘরে ব’সে শুনতে পাচ্ছিলাম সব কথা – বাবা, স্বপনদা, আর দুই আভার কথা। এক আভা স্বপনদার নতুন বৌ নন্দিতা, আর একজন আমার আভাবৌদি ছিল, এখন আমার প্রিয়তমা শিউলি, সমস্ত অফিসিয়াল ডকুমেন্টে ও আমার জীবনে পার্টনার – যদিও কোনোভাবেই বিয়ে হয়নি আমাদের কোনদিনই। কীভাবে পাশের ঘরে গিয়ে শিউলিকে উদ্ধার ক’রে আনবো, সেজন্যে আকাশ-পাতাল ভাবছিলাম – দেখলাম আমার মোবাইলে একটা ছোট বাবলুর ইমেল/হোয়াটস্ অ্যাপ:-
‘বাবলুদা, আপনার কথামতো মিষ্টিকে নিয়ে উধাও হ’য়েছি; দিল্লীতে এসে মাসীমার বাড়ীতে উঠেছি। মাসীমাকে প্রায় সত্যি কথাই ব’লেছি। ব’লেছি মিষ্টির মা-বাবা দিল্লীতে থাকেন, দুদিন বাদে ওঁরা এসে নিয়ে যাবেন। এখানে আমার মাসতুতো বোনের সঙ্গে মিষ্টির বন্ধুত্ব হ’য়েছে, রাত্রে ওরা এক বিছানাতেই শোয়। আমি মিষ্টিকে আপনাদের কথা বলেছি; ওর আর আমার মোবাইল নাম্বার দিলাম। দরকারমতো ফোন ক’রবেন, প্লীজ।‘
এবার আমার আত্মপ্রকাশ, আত্মসমর্পণ না ক’রলেই নয়।
পাশের ঘরে ঝাঁপ দিয়ে পায়ে পড়লাম স্বপনদার পায়ে, বললুম, ‘আমাকে বাঁচাও, আমার সমস্ত অপরাধ ক্ষমা ক’রে দাও। আমিই আভাবৌদিকে নিয়ে পালিয়েছিলুম। এখন আমার কাছে ও আর আভাবৌদি নেই; ও এখন আমার শিউলি, যার কথা বারবার ব’লেছি তোমাকে। তবে, ও এখনও মিষ্টির মা।
এখন আর আভাবৌদিকে ফিরে চেও না, প্লীজ। ওকে শিউলি হ’য়ে বাঁচতে দাও আমার সঙ্গে।
এখন শুধু মিষ্টির মা নয়, ১৪ বছরের রিমি আর ৮ বছরের মিন্টুরও মা শিউলি।‘
আমাকে থামিয়ে দিলো স্বপনদা, ‘আর বলতে হবে না। মানুষকে বিশ্বাস ক’রে ঠকতে রাজী আছি আমি, অবিশ্বাস ক’রে বন্ধুত্ব হারাতে চাইনি কখনও। ব’লবি, কেন তুই আভাকে নিয়ে পালিয়েছিলি?’
কোনো জবাব আসছিল না আমার মুখে; জবাব দিল শিউলি, ‘দোষ বাবলুর নয়, আমার – আমিই পালিয়েছিলাম তোমাদের বাড়ী থেকে, ওখানে মেয়েরা অবাঞ্ছিত ব’লে। বাবুমণি আর মামণি আশা ক’রেছিলেন আমাদের ছেলে হবে; মিষ্টি হবার পর ওঁদের সে আশা ভেঙে গেছে। তোমার আচার আচরণেও তফাৎ দেখিনি বড় একটা; তুমি আমাকে দেখেছ এক ক্রীতদাসী হিসেবে, সমান অংশীদার হিসেবে নয়। বাবলু আর আমার সংসারে আমরা দুজনে মিলে ঠিক করি কিভাবে চলবে আমাদের জীবন; ও আমাকে ডাকে ‘শিউলি’ ব’লে, ‘রিমির মা’ বা ‘মিন্টুর মা’ ব’লে নয়।‘
স্বপনদা একটা লম্বা নিঃশ্বাস ফেলে বললো, ‘যাও তুমি বাবলুর সঙ্গে। সুখে থাকো। আর মুখ দেখিও না আমাকে। ফিরে আসুক মিষ্টি; আমি থাকবো মিষ্টির বাবা হয়ে। আমাদের পাড়ার নতুন বাবলুর সঙ্গে খুব মনের মিল ওর; আমি চাই মিষ্টি গ্র্যাজুয়েট হোক, স্বাবলম্বী হোক বিয়ের আগে। কোনোদিন যদি দরকার মনে করো, ফিরে এসো মিষ্টির বাবার কাছে, ‘মিষ্টির মা’ হ’য়ে নয়, শিউলি আভা অথবা অন্য কোনো নাম নিয়ে। আশা করি, নন্দিতা থাকবে আমার সঙ্গে আজীবন; তার সঙ্গে তেজের আভা থাকলে আরো সম্পূর্ণ হবে আমাদের জীবন...’
–––––––––––––––––
Click Follow to receive emails when this author adds content on Bublish
Comment on this Bubble
Your comment and a link to this bubble will also appear in your Facebook feed.